শুক্রবার, ৮ জুন, ২০১২

পিতাকে পুত্র

পিতাকে পুত্র


॥ বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম ॥

(৯)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

১৬ মে বোয়ালমারীর গণহত্যা দিবস নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পরের দিনগুলো থেকে সরে এসেছিলাম। আজ আবার সে দিকে যেতে চাই। কিন্তু তারও আগে দেশের সাম্প্রতিক হালহকিকতের সামান্য কিছু না বললে তুমি খুবই অন্ধকারে থাকবে। আজকাল বড় মারাত্মক মারাত্মক ঘটনা ঘটছে, যা তোমার ধারণারও বাইরে। প্রথমেই একটা ছোট্ট ঘটনা বলি। লম্বাচোড়া মানুষেরা কিছুটা আত্মভোলা হয়। সে েেত্র তুমি-আমি দু’জনেই তো লম্বাচওড়া হওয়ার কারণে এক গোত্রভুক্ত। স্বাধীনতার পর ভাবতাম মানুষ আমাদের কত ভালোবাসে। কিন্তু পরবর্তীকালে দেখলাম আমাদের বহু মানুষ ভালোবাসে ঠিকই, আবার কিছু মানুষ ভালোবাসে না। তার মধ্যে কেউ কেউ না জেনেই। বছরখানেক আগে এক মহিলা রাজনৈতিক কর্মী বলেছিল, ‘যুদ্ধের সময় আপনি আমাদের বাড়িতে ছিলেন। আমার মা-বাবা আপনাকে খাইয়েছেন। আপনি দু-তিন দিন ছিলেন সেখানে।’ আসলে যুদ্ধের নয় মাস তো লোকজনের বাড়িতেই থেকেছি। তাই তাদের বাড়িতে থাকাও বিচিত্র নয়। কিন্তু সে যখন বারবার বলছিল দুই-তিন দিন তাদের বাড়িতে ছিলাম, তখন গ্রামের নামধাম জিজ্ঞেস করে যখন দেখলাম সে এলাকায় একবার গিয়েছিলাম, তখনকার নাগরপুর এখন দেলদুয়ার থানার এলাসিন বাজারের দেিণ আমরা হানাদার বাহিনীর ওপর একটা আচমকা আক্রমণ করেছিলাম। কিন্তু কোনো দিন সেখানে ছিলাম না। নাগরপুর-টাঙ্গাইল রাস্তার পাশে হওয়ায় সেখানে থাকার কোনো সুযোগও ছিল না। তার পরও সে তাদের বাড়িতে জোর করেই তিন-চার দিন রাখবেন, যতœ করে খাওয়াবেনÑ আমি আর কী করতে পারি? আমি যখন থাকব না তখন তারটাই হয়তো প্রতিষ্ঠিত হবে। এই ক’দিন আগে এক ভদ্রলোক এসেছিলেন। তার এখন দেশসেবার খুব আগ্রহ। মুক্তিযুদ্ধের সময় নাকি লন্ডনে ছিলেন। কথাবার্তায় বুঝলাম, তিনি আগাগোড়াই অন্য ঘরানার মানুষ। ছাত্রজীবনে মুসলিম লীগের ছাত্রসংগঠন এনএসএফ করতেন। কিন্তু তোমার প্রতি তার যে এত অশ্রদ্ধা কথা না বললে বুঝতে পারতাম না। যুক্তফ্রন্টের আমলে দুর্নীতি দমন মন্ত্রী ছিল। তাই তুমি খুব দুর্নীতি করেছ। যারা ভালো ভালো মানুষ তাদের নামে মামলা-মোকদ্দমা দিয়ে নাজেহাল করেছ। যখন তাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘থানা-জেলা পর্যায়ে মন্ত্রীরা কারো নামে মামলা দেয় কি? নাকি সেখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মামলা তৈরি করে?’ লোকটি আইনের মানুষ। ভালো জবাব দিতে পারলেন না। অনেক লেখাপড়া জানা ধনী মানুষ। কিন্তু তাকে খুব একটা স্বাভাবিক মনে হলো না। আমি যে তোমার পাগল, তা বাংলাদেশের কাকপীও জানে। তার পরও ভদ্রলোক তার এক অনুষ্ঠানে নেয়ার দাওয়াত দিতে এসে তোমাকে খারাপ বলছে। ও থেকেই বুঝেছি লেখাপড়া জানলে কী হবেÑ বিচার-বিবেচনার দিক থেকে তেমন সুবিধার নয়। ঠিক তেমনি ঘটনা ঘটেছে আমাদের সর্বোচ্চ আদালতে। আসলে ইদানীং কেউ কারো সীমায় থাকতে চায় না। দু’কথা বলে রাতারাতি কেমন যেন বিখ্যাত হতে চায়। বিচারকেরা বিচারালয়ে বসে বিচারের বাইরে ইদানীং অনেক কথা বলেন। কেন যেন তারা মনে করছেন বিচারের আসনে বসলে যা খুশি তাই বলতে বা করতে পারেন। এসব দেখে বারবার বাবার কথা মনে পড়ে।
আজ থেকে প্রায় ৫০ বছর আগে ময়মনসিংহের জজকোর্টে জমিলা নামে এক মহিলা তার জায়ের বাচ্চাকে উঠানে ছুড়ে মেরে ফেলেছিল। সেই মামলায় মফস্বলের একজন মোক্তার হিসেবে বাবা প্রথম গিয়েছিলেন ময়মনসিংহ জজকোর্টে। মফস্বলের মোক্তার বলে জজ সাহেব বাবাকে খুব তাচ্ছিল্য করে বলেছিলেন, ‘মামলায় কিছু নেই। আসামি ফাঁসির যোগ্য অপরাধী, শুধু একটি ছোট্ট বাচ্চা আছে বলে তাকে যাবজ্জীবন দেবো। তাই অযথা সময় নষ্ট করবেন না।’ বাবার পীড়াপীড়িতে জজ সাহেব সওয়াল জবাবের সুযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু মাঝপথে একবার থামিয়ে দিয়ে বাবাকে সতর্ক করে বলেছিলেন, ‘আপনি আরো সওয়াল জবাব করলে আসামিকে ফাঁসি দেবো।’ বাবা খুবই রাগান্বিত হয়ে জজ সাহেবকে চ্যালেঞ্জ করে বলেছিলেন, ‘মানুষের বাড়িতে জাগির থেকে লেখাপড়া করিনি। লোয়ার কোর্টে প্র্যাকটিস করলেও নকল করে পাস করিনি। জজের চেয়ারে বসলেই যা খুশি তা করা যায় না। আপনার হাত-পা বাঁধা। আমি যা বলব তা শুনবেন, যে আইন দেখাব তা দেখবেন, আমি যা লেখাব তাই লিখবেন। আপনি বোবা, কালা, অন্ধ।’ এতে জজ সাহেব খুব রাগ করেছিলেন। কিন্তু সওয়াল জবাব শেষে আসামিকে খালাস দিতে বাধ্য হয়েছিলেন এবং এরপর আজীবন তিনি বাবার পরামর্শ নিতেন এবং প্রধান বিচারপতি না হলেও হাইকোর্টের বিচারপতি হয়েছিলেন। কিন্তু কেন যেন এখন বিচারপতিরা এজলাসে বসে নোট নেন কম, বলেন বেশি। অতি সম্প্রতি তেমনই করেছেন বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। কী মারাত্মক কথা! কয়েক দিন আগে জাতীয় সংসদ চলাকালে স্পিকার আবদুল হামিদ আদালত এবং সরকার সম্পর্কে একটি মন্তব্য করেছেন। এমনিতে হামিদ সাহেব কিশোরগইঞ্জা মানুষ। তার প্রত্যেকটি কথায় আঞ্চলিক টান থাকে। তিনি তা নিয়ে তেমন কিছু মনে করেন না। স্বাচ্ছন্দ্যেই যখন যা মনে হয় আঞ্চলিক ভাষা এবং ভাব নিয়ে কথাবার্তা বলেন। অনেক সময় বেখাপ্পা কথাও বলেন। কিন্তু হাইকোর্টের বিচারপতি তার যে কথায় প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন, সেখানে স্পিকার আবদুল হামিদ কোনো অসংলগ্ন বা অসঙ্গত কথা বলেননি বরং যথার্থ একজন দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক নেতার মতো বলেছেন, ‘আদালত যদি জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বেশি বাড়াবাড়ি করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে জনগণ রুখে দাঁড়াতে পারে। সরকারও যদি বাড়াবাড়ি করে তার বিরুদ্ধেও জনগণ রুখে দাঁড়াতে বা প্রতিরোধ করতে পারে।’ 
রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে জনগণ কি পারে না? সব পারে। সমাজব্যবস্থায় আল্লাহর পরই জনগণের স্থান। জনগণ বিশৃঙ্খল থাকে বলে তাদের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে সবাই খায়। কিন্তু জনগণ কখনো একত্র হলে পৃথিবীর কোনো শক্তি নেই যে তাদের ঠেকাতে পারে। এই সাদা কথাটা স্পিকার অতি সুন্দরভাবে খুবই স্পষ্ট করে বলেছেন। কিন্তু চুলকিয়ে ঘা করার মতো বিচারপতি এজলাসে বসে একেবারে অপ্রাসঙ্গিকভাবে স্পিকারের ওই কথাকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল বলে মন্তব্য করে বিচারকের আসনের চরম অমর্যাদা করেছেন। মাননীয় স্পিকার তার মন্তব্যটি সংসদ চলাকালীন সংসদে করেছেন। বাইরে করলেও না হয় একটা আলোচনার সুযোগ ছিল। কিন্তু সংসদের ভেতরে কোনো আলোচনা চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ কারো নেই, বিশেষ করে আদালতের লোকজনের। সংসদের কোনো কথা নিয়ে বিচার সালিশ করা যায় না। সাধারণ মানুষ যা খুশি তা আলোচনা করতে পারেন। কিন্তু কোনো বিচারক বিচার আসনে বসে সংসদে আলোচিত কোনো কিছু নিয়ে মন্তব্য করা সংবিধান পরিপন্থী এবং শপথ লঙ্ঘনের শামিল। অনুরাগ-বিরাগের বশবর্তী হয়ে বিচার আসনে বসা যায় নাÑ এটা ইদানীং অনেকেই ভুলে গেছেন। আর ভুলবেনই না কেন, আওয়ামীপন্থীরা মতায় এলে তাদের পছন্দের বিচারক, বিএনপি এলে জ্যেষ্ঠতা ভেঙে তাদের পছন্দের বিচারক। এখানে গুণ, মান, যোগ্যতা, মেধার কোনো মূল্য নেই। বড় এক অরাজক অবস্থা। কিভাবে যে এ থেকে জাতি পরিত্রাণ পাবে! এখন এই বিচারককে যদি সরিয়ে দেয়া না হয়, তাহলে কলেরা রোগের মতো ছড়িয়ে পড়বে। তাই এর একটা হেস্তনেস্ত হওয়া উচিত। চার দিকে বড় বেশি উত্তেজনা। রাস্তাঘাটে, স্কুল-কলেজে, কলকারখানায় কোথাও শান্তি ও স্বস্তি নেই। তোমার মৃত্যুর পর সে যে কী জাতীয় দুর্যোগ নেমে এসেছিল আমার এবং আমার পরিবারের ওপরÑ সেই দুঃসময়গুলো নিয়ে যতটা সম্ভব এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। এখন তো আর তুমি একা নও, তোমার ১৬ কোটি সন্তান। তোমাকে বলা এ কথা তারাও জানতে চায়। 
মা আরো বলেছিলেন, ‘রাস্তায় বেরুলে দেখবি আল্লাহর পথে শুধু আলোই আছে কোনো অন্ধকার নেই।’ আমার নানা খন্দকার আবদুল ওয়াহেদ কালু মিয়া বলতেন, ‘খোদা কা ঘরমে দের হ্যায়, আন্ধের নেহি’। এটা একটা বিখ্যাত ফারসি শায়ের। মা চলে যাওয়ার পরই পুরোদমে প্রস্তুতি চলছিল। হাতে কোনো টাকা-পয়সা ছিল না। টাকা-পয়সার চিন্তাও করতাম না। সর্বমোট হাজার আড়াই টাকা, একটা হাতঘড়ি, ’৬৮ সালে মায়ের দেয়া আট আনি সোনার একটা আংটি, সহকর্মীদের কাছে চার-পাঁচ ভরি সোনার চেইনÑ এই যা সম্বল। আমি সব সময় পাজামা-পাঞ্জাবি আর মুজিবকোট পরতাম। পাজামা-পাঞ্জাবি পরে বেরুতে চাইনি। শার্ট-প্যান্ট পরে বেরুতে চেয়েছিলাম। শার্ট-প্যান্ট ছিল না। কোথা থেকে দুলাল একটি শার্ট আনলে সেটা গায়ে লেগেছিল। নুরুন্নবী নিয়ে এসেছিল ১০-১১ টাকার একজোড়া স্যান্ডেল। সমস্যা হলো প্যান্ট নিয়ে। শেষ পর্যন্ত প্রখ্যাত সাংবাদিক গজনবী রোডের মোদাব্বের দাদুর একটা প্যান্ট কী করে কে যেন নিয়ে এলো। প্যান্টটা লম্বায় হলেও কোমর লাগছিল না। অনেক চেষ্টা করেও কিছু করা গেল না। ওইভাবেই শার্ট ওপরে দিয়ে কোনো রকম চালিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা হলো। ২১ আগস্ট দুই-আড়াইটার দিকে ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলের উদ্দেশে রওনা হলাম। বড় ভাই কেবলই একটি ছোট্ট টয়োটা গাড়ি কিনেছিলেন। আগে কেউ সে গাড়িতে চড়েনি। নম্বরটা ভুলে গেছি, ১২১৫ অথবা ১৫১২ হবে। কাউকে গাড়ি চালাতে দেইনি, নিজেই চালাচ্ছিলাম। সাথে লুৎফর, দুলাল, রেজাউল করিম, খসরু আরো যেন কে কে ছিল। রাস্তায় তেমন বিপদের আশঙ্কা করিনি। টাঙ্গাইল দিয়ে পার হওয়ার সময় কাউকে কোনো খবর দেইনি। মধুপুর পেরিয়ে যাওয়ার আগে কেউ বুঝতেও পারেনি। কারণ সে দিন আমি যে গাড়িতে যাচ্ছিলাম ওই গাড়িতে আগে চড়িনি। তাই কেউ খেয়াল করেনি। আমাদের সাথে রীবাহিনীর একটা জিপও ছিল। তাই আরো দৃষ্টি পড়েনি। সাড়ে পাঁচ-ছয়টার দিকে জামালপুর ফেরিঘাটের কাছে পৌঁছে দেখি ফেরি ওপারে শেরপুরের দিকে। ঘাটে অপো করতে ইচ্ছে করছিল না। একটা নৌকা ভাড়া করে তখনই পার হওয়ার কথা চিন্তা করলাম। আগে ভেবেছিলাম জামালপুর ফেরি পার হওয়া গেলে যতটা সীমান্তের কাছে যাওয়া যায়, গিয়ে গাড়ি ছেড়ে দেবো। কিন্তু ফেরি জামালপুরের পাড়ে না থাকায় গাড়ি ছেড়ে তাড়াতাড়ি পার হওয়ার চেষ্টা করি। আমাদের পৌঁছে দিয়ে গাড়ি নিয়ে ঢাকায় ফিরতে মোদাব্বের দাদুর ছেলে ইকবাল হাসান মন্টি মামার খুবই কষ্ট হয়েছিল। আমরা নৌকায় করে প্রথম প্রথম শেরপুরের পাড়ে নামার চিন্তা করেছিলাম। কিন্তু নৌকায় উঠেই মনে হলো শেরপুরে না নেমে আরো উজিয়ে গেলে কেমন হয়। নদীপথেও একেবারে ভারত সীমান্তের কাছাকাছি যাওয়া যায়। কিন্তু জামালপুর থেকে আঁকাবাঁকা নদীপথে যে অত দূর তা বুঝতে পারিনি। নৌকার মাঝি আমাদের চিনতে পারেনি। সে সাধারণ মানুষই মনে করেছে। আমরা নদীপথেই জিঞ্জিরাম, মহেন্দ্রগঞ্জ অথবা কামালপুরের কাছাকাছি কোথাও যেতে চেয়েছিলাম। এখন ব্রহ্মপুত্র নদী একেবারে শুকিয়ে গেছে। কিন্তু তখন এমনটা ছিল না। কোনো কোনো জায়গায় দুই-তিন মাইল প্রস্থ ছিল। সারা রাত চলার পর নৌকা থেকে নামলে আস্তে আস্তে সকাল হলো। খোঁজ নিয়ে জানলাম আমরা কামারের চরে নেমেছি। কামারের চর আগে থেকেই চিনতাম। মুক্তিযুদ্ধের সময় কামারের চরে গিয়েছিলাম। উত্তর দিকে হাঁটতে শুরু করলাম। তখন এত এলোমেলো রাস্তা ছিল না। তাই ভুল হওয়ার কোনো কারণ ছিল না। কামারের চর থেকে ডোবার চর তারপর ঝগড়ার চর সেখান থেকে বকশীগঞ্জ। চন্দ্রবাজ, পলাশতলা, লাউচাপড়া বাজার আমরা চলছি তো চলছিই, রাস্তা ফুরায় না। দুপুর গড়িয়ে গেল। সেই আগের দিন দুপুরে খেয়েছি। রাতে একটুও দানাপানি জোটেনি। পকেটে কিছু পয়সা আছে কিন্তু খাবার পাবো কোথায়? রাস্তায় কেউ চিনতে পারুক এটা আমরা চাইনি। এখন যেখানে-সেখানে রাস্তাঘাটে যা খুশি তা-ই পাওয়া যায়। কিন্তু তখন কিছুই পাওয়া যেত না। দুপুরের দিকে সবাই কেমন যেন নির্জীব হয়ে পড়ছিল। আমারও পা ধরে আসছিল। ুধার জ্বালায় থাকতে না পেরে রাস্তার ধারে এবাড়ি-ওবাড়ি থেকে চাল চেয়ে চিবিয়ে পানি খাচ্ছিলাম। তাতেও কোনো সুবিধা হচ্ছিল না। বিকেল চার-সাড়ে চারটার দিকে কেন যেন চলন-শক্তি রহিত হয়ে পড়ছিল। বারবার মনে হচ্ছিল আর বুঝি পারছি না, মাথা ঘুরে চেতনা হারিয়ে ফেলার অবস্থা। তবু পাড়ি দিতেই হবেÑ উপায় নেই। (চলবে) 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন